ব্যাংক শেয়ারের ভয়াবহ পরিণতি
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম
তালিকাভুক্ত আস্থাভজন ব্যাংক খাত শেয়ারে বিনিয়োগ প্রতি ক্রমান্বয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ফলে এ খাতে বিনিয়োগে রয়েছে ভাটা। এই ভাটার পরিসর বাড়তে থাকলে, একসময়ে ব্যাংক বিনিয়োগ ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক উন্নয়নের গতি বাড়াতে ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। এ খাতের শেয়ার বিনিয়োগ ঝুঁকি কম। এ খাত আস্থাভাজন হিসেবে রয়েছে বিনিয়োগকারীদের কাছে। কারণ ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন এবং শেয়ার সংখ্যা বেশি।
যে কারণে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এ খাতকে বিনিয়োগ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। আবার কোম্পানিগুলোর লেনদেন ও দর ওঠানামা অনেকটাই স্থিতি বজায় থাকে। অন্যান্য কোম্পানির মতো ঢালাওভাবে এ খাতের শেয়ার দর উত্থান-পতন হয় না। কিন্তু কয়েক বছর ব্যবসায়িক মন্দার কারণে বেশি মুনাফা দিতে পারেনি। কয়েক বছর ধরেই এ খাতের শেয়ারে দর রয়েছে অবনতিতে।
তারা আরো বলেন, এক সময়ে পুঁজিবাজারে চাহিদার শীর্ষে ছিল এখাত। কিন্তু নানা কারণে সে চাহিদায় ভাটা রয়েছে। ২০১০ সালের ধসে ব্যাংকগুলোর শেয়ার দরে পতন ঘটে। এসময়ে সবাই মনে করতেন পুঁজিবাজারে ধস নামলেও ব্যাংকিং খাতে তেমন প্রভাব পড়বে না।
কিন্তু তাদের সে ধারণার চির ধরছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এখাত থেকে। এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টির মধ্যে ২৬টি ব্যাংকের শেয়ার দর সম্পদ মূল্যের নিচে রয়েছে। বাকি ৪টি কোম্পানি সম্পদ মূল্যের উপরে অবস্থান করছে।
বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর খাত হিসেবে মূল্য-আয় (পিই) অনুপাতে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে এই খাতে। এ খাতের পিই হচ্ছে ৭.৭৭ যে কোম্পানির পিই অনুপাত যত বেশি হবে সে কোম্পানির বিনিয়োগের ঝুঁকিও তত বাড়বে।
পিই অনুপাত ১০ এর কম রয়েছে, সে সব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কম থাকে। সে হিসেবে ব্যাংকিং খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার পিই অনুপাত হিসেবে বিনিয়োগের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে বেশি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তারা মনে করেন, বড় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ না করার নাজুক অবস্থা ব্যাংক খাতে। তারা বলেন, বড় বিনিয়োগকারীরা ডে ট্রেডারের ভূমিকা পালন করছে।
দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের বিপরীতে তারা স্বল্পমেয়াদি ক্রয়বিক্রয় করছে। তাদের এ ধরণের আচরণ অপেশাদার বলে মন্তব্য করেন তারা।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক খাতকে উত্তম মনে করা হয়। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বর্তমানে এই খাতে বিনিয়োগে অনীহা বিনিয়োগকারীদের। এর অন্যতম কারণ আগের বছরের তুলনায় মুনাফায় নিম্নমুখী।
প্রতিক্ষণ/এডি/রবি